১৯শে জুন, ২০২৫

আমাজনে আবিষ্কৃত হলো উভচর ইঁদুরসহ ২৮ নতুন প্রজাতি

পেরুর আমাজন অঞ্চলের বৃষ্টিবহুল অরণ্যে নতুন আবিষ্কারের এক অসাধারণ ঘটনা সামনে এসেছে। গবেষকরা উভচর ইঁদুরসহ ২৮টি নতুন প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, মাছ, ব্যাঙ, এবং প্রজাপতির মতো বৈচিত্র্যময় প্রাণী।

এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও প্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থার র‌্যাপিড অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রামের শীর্ষ নির্বাহী ট্রন্ড লারসেন জানান, প্রজাতিগুলোর মধ্যে রয়েছে কাঁটাযুক্ত ইঁদুর, ছোট আকারের কাঠবিড়ালি, আট ধরনের মাছ, তিন ধরনের উভচর, এবং ১০ ধরনের প্রজাপতি।

লারসেন বলেন, “আমরা এমন একপ্রকার ইঁদুরের সন্ধান পেয়েছি, যা মাটি ও পানিতে সমানভাবে চলাচল করতে পারে এবং খাবার সংগ্রহের জন্য প্রধানত পানির ওপর নির্ভর করে। এছাড়া আমরা এক ধরনের নতুন কাঠবিড়ালি পেয়েছি, যার আকার একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষের হাতের তালুর চেয়েও ছোট। এছাড়া আঁশযুক্ত মাগুর মাছেরও সন্ধান মিলেছে।”

এই নতুন প্রজাতিগুলোর বেশিরভাগই আমাজনের আলটো মায়ো সংরক্ষিত অঞ্চলে পাওয়া গেছে। ট্রন্ড লারসেন জানান, “এই অঞ্চলটি জঙ্গলের গভীরে নয়, বরং সংরক্ষিত অঞ্চলের কাছাকাছি। যদি জঙ্গলের গভীরে যাওয়া যায়, তবে আরও অনেক নতুন প্রজাতি আবিষ্কারের সম্ভাবনা রয়েছে।”

আলটো মায়ো অঞ্চলে বসবাসকারী আওয়াজুন নৃগোষ্ঠীর মানুষের সহায়তায় গবেষণা আরও সহজ হয়েছে। লারসেন বলেন, “তাদের বন ও প্রাণিকুল সম্পর্কে ঐতিহ্যগত জ্ঞান আমাদের জন্য খুবই সহায়ক।”

যদিও নতুন প্রজাতির সন্ধান গবেষকদের উৎসাহিত করেছে, তবে আমাজনের দ্রুত উজাড় হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন লারসেন। তিনি বলেন, “এই জঙ্গল উজাড় হতে থাকলে ভবিষ্যতে এখানকার বাস্তুসংস্থানের ওপর গুরুতর প্রভাব পড়বে।”

আমাজন বন দক্ষিণ আমেরিকার ৯টি দেশজুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে পেরু, ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, এবং অন্যান্য দেশ রয়েছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম বৃষ্টিবন হিসেবে পরিচিত এবং বৈচিত্র্যময় জীববৈচিত্র্যের জন্য বিখ্যাত।

২০২২ সালের জুন থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে মোট ১৩ জন গবেষক কাজ করছেন। দলটি আশা করছে, ভবিষ্যতে আরও অজানা প্রজাতি শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন