বিশেষ প্রতিনিধি :
কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন মিঠাপুর এলাকায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় স্থানীয় বিএনপি নেতা নুরুর ভাগ্নে সোহান ও রোহানের বর্বরোচিত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন প্রবাসী সাইদুল রহমান বর্তমানে সাইদুল ঢাকা ল্যাবএইড মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে ঘটনার ৪-দিন পেড়িয়ে গেলেও থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা মামলা নিতে গড়িমসি করছে এবং স্থানীয় বিএনপি নেতার প্রভাবে হামলাকারীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
এবিষয়ে দৈনিক খবরের আলোর অনুসন্ধানি প্রতিবেদক কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি মনিরুল হক ডাবলুকে মুঠোফোনে ঘটনার ৪দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও মামলা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি একপর্যয়ে তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে জানায়। আর বলেন বাদীকে থানায় পাঠিয়ে দিন আমি এখনি মামলা নিব।
জানা যায়, মিঠাপুর এলাকার অসহায় মহিউদ্দিন এর ছেলে সাইদুল দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। সাম্প্রতিক দেশে ফেরার পর তিনি স্থানীয় চাঁদাবাজদের নজরে পড়েন। সোহান ও রোহান নামের দুই কিশোর গ্যাং সদস্য। যারা সম্পর্কে বিএনপি নেতা নুরুর ভাগ্নে। দীর্ঘদিন ধরে সাইদুল ও তার পরিবারের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল।
এর আগেও তারা ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করেছে বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। গত বৃহস্পতিবার সোহান ও রোহান আবারও সাইদুলের কাছে ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। সাইদুল এই অন্যায্য দাবির প্রতিবাদ করলে বিবাদীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। একই দিন বিকালে, কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন কলতিয়া ইউনিয়নের মিঠাপুর গ্রামের সাইদুলের বাড়ির সামনের কাঁঠাল ও তেঁতুল গাছ কাটতে আসে সোহান ও রোহান। সাইদুল বাধা দিতে গেলে তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। সাইদুল তাদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে সোহানের হাতে থাকা গাছ কাটার দা-কুড়াল দিয়ে সাইদুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেটের বাম পাশে কোপ মারে, ফলে গুরুতর জখম হয় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এছাড়াও, তার দুই পায়ের হাঁটুর নিচে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এর পর রোহান লোহার রড দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে, যার ফলে সাইদুলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত তৈরি হয়, এবং নাকের হাড় ভেঙে যায়। সাইদুলের স্ত্রী মেহেরুন আক্তার স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও দা দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় সাইদুলের গলায় থাকা প্রবাস থেকে আনা একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। সাইদুল ও তার স্ত্রীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদের এবং সাইদুলের পরিবারের লোকদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইদুলকে উদ্ধার করে প্রথমে কলাতিয়া মডার্ন হাসপাতাল এবং পরে কেরাণীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিডফোর্ড) ঢাকায় রেফার্ড করা হলেও তারা সাইদুল এর অবস্থা দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য পরমর্শ দেয়।
ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে তারাও সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য বলেন। বর্তমানে সাইদুল ঢাকা ল্যাবএইড মেডিকেল হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। ভুক্তভোগী মহিউদ্দিন অভিযোগ করেছেন, সাইদুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এবিষয়ে থানার ওসির সাথে মুঠোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন মামলা হয়েছে তবে মামলা হয়েছে দুইটি তার ভিতরে একটি কাউন্টার মামলা। পরে ওসিকে প্রশ্ন করা হয় গত বৃহস্পতিবার ঘটনার সূত্রপাত যাতে গুরুত্ব আহত হয় সাইদুল রহমান নামের এক প্রবাসী পরে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পরিবারের অভিযোগ ঘটনার দিন থেকে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাদের মামলা গ্রহন করেনি। কিন্তু ঘটনার ৪দিন পর মামলা নেয়া হয় যার নাম্বার-১৫। সাইদুল রহমান এর মামলা নেয়ার পর তার পরিবারের বিরুদ্ধে একটি কাউন্টার মামলা হয় যাহার নাম্বার ১৬। এমন প্রশ্নে ওসি বলে কাউন্টার মামলার বাদী সুস্থ হয়ে এসে কাউন্টর মামলাটি করে। ওসি কেরানীগঞ্জ এর কেরামতি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সোহান ও রোহান এর মামা নুরু বি.এন.পি’র রাজনৈতিক এর সাথে জড়িত থাকায়, এমন কর্মকাণ্ড এখন তাদের নিত্যদিনের কার্যক্রমে পরিনত হয়েছে। স্থানীয় মিঠাপুর এলাকায় তার ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজির মহোৎসব চালাচ্ছেন, এবং এলাকাবাসী তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এ ঘটনায় স্থানীয় জনমনে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে তারা পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছেন।





