২৬শে জুন, ২০২৫

কালীগঞ্জে দিনের আলোয় গৃহবধূর বাড়িতে হামলা, ৩৬ লক্ষ টাকার লুটপাট

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় মধ্য পানজোড়া এলাকায় শান্তা ইসলাম নামের এক গৃহবধূর বাড়িতে ভয়াবহ সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা বাড়ির মূল্যবান আসবাবপত্র, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ লুটে নেয়। এতে প্রায় ৩৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী শান্তা ইসলাম কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার (২০ জুন) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন। তিনি জানান, ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলা তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগে জানা যায়, ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত ৮ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে। ওইদিন শান্তা ইসলামের মেয়ে চাঁদনি আক্তারকে অপহরণের অভিযোগে করা হয়, যেখানে রিফাত নামের এক যুবককে প্রধান আসামি করা হয়। অভিযোগ অনুযায়ী, রিফাত জোরপূর্বক চাঁদনিকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় মেয়েটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।
এরপর থেকেই অভিযুক্ত রিফাতসহ অন্যান্য আসামিরা শান্তা ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে এবং হয়রানি চালিয়ে যায়। এ অবস্থায় গত ২০ জুন বিকেলে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছে।

২০ জুন সকালে রিফাত, জিহাদ, কবির হোসেন, আশিক, দিপুসহ মোট ৭ জন এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৩-৪ জন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (দা, ছেনি, চাপাতি, লাঠিসোটা) নিয়ে শান্তা ইসলামের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা বাড়ির দরজা-জানালা ভাঙচুর করে, পরিবারের একাধিক সদস্যকে মারাত্মকভাবে আহত করে এবং ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র তছনছ করে দেয়। এই ভাঙচুরে প্রায় ছয় লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এছাড়া হামলাকারীরা তিনতলায় প্রবেশ করে ঘরের ভেতরে থাকা আলমারি ভেঙে ফেলে। সেখানে থাকা প্রায় ২৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, যার আনুমানিক মূল্য ৩০ লক্ষ টাকা এবং নগদ ১০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

কালীগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার পরপরই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ অভিযান শুরু করেছে এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। ওসি আলাউদ্দিন আশ্বাস দিয়েছেন, দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না।

এই ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন