ষ্টাফ রিপোটার মোঃ জীবন আহমেদ ফারুক – মানিকগঞ্জ::
মানিকগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরে আলম সরকারের ইটভাটাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে অন্তত ৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আজ শনিবার পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে পুরো ইউনিয়ন জুড়ে।
আহতদের মধ্যে তিনজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন– আটিগ্রাম ইউনিয়ন কৃষি জমি ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব জয়-ই-মামুন(৪০), ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য রুস্তম সরকার (৪২), ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম (২২)। এ ছাড়া ও আহত অন্তত ২-৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আটিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছানোয়ার হোসেন দেওয়ান বলেন, ‘আটিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরে আলম সরকার তাঁর নিজস্ব ইটভাটাসহ প্রায় ডজন খানেক ভাটায় দেওয়া মাটির ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বিএনপির ওই গুটিকয়েক নেতাকে হাতে রেখেছিলেন। শুক্রবার আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আহতরা উপস্থিত হলে বিএনপির সাবেক সেচ্ছাসেবক দলের নেতা ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা হয়। এ হামলায় আমরা ইউনিয়ন বিএনপি তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি করছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, আটিগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরে আলম সরকারের ইটভাটাসহ ওই ইউনিয়নের প্রায় এক ডজন ভাটায় মাটি দেওয়ার ব্যবসা নিজেদের দখলে নিতে চায় বিএনপির দুই গ্রুপ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির ইউনিয়ন কৃষি জমি ও কৃষক বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব ও যুবদল নেতা জয়-ই-মামুন, বিএনপির নেতা রুস্তম সরকার, সেচ্ছাসেবকদলের নেতা ওয়াসিম আকরামসহ বেশ কয়েকজন আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ তালা দিতে যায়।
এ সময় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরে আলম সরকার বিষয়টি টের পেয়ে তাঁর দীর্ঘদিনের জনসাধারন ও অনুসারী হিসেবে পরিচিত বিএনপির অপর পক্ষের সেচ্ছাসেবক দলের নেতা ফারুক হোসেন, বিএনপি নেতা সেলিম হোসেন, শ্রমিক দলের নেতা শফিকুল ইসলাম শফিসহ কয়েকজন নেতাকে জানালে তারা পরিষদে গিয়ে জয়-ই-মামুনের অনুসারীদের কথা কাটাকাটি হয় এবং দু- পক্ষের সংঘর্ষ হয়, পড়ে স্থানীয়রা আরও জানান, মারপিটের শিকার হয় দু- পক্ষ, ঘটনাস্থল থেকে জয়-ই-মামুনের অনুসারীরা চলে যান, এ সময় জয়-ই-মামুনের অনুসারীদের মধ্যে সবাই ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও লুৎফর রহমান নামের এক বিএনপি সমর্থককে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের সমঝোতায় তিন ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
আটিগ্রাম ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা নূরে আলম সরকার বলেন, ‘লুৎফর রহমান ও জয়-ই-মামুনের নেতৃত্বে কয়েকশ ছেলে বিকেলে আমার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় গিয়ে অহেতুক দরজা, জানালা, চেয়ার টেবিল ভাংচুর করে এবং পরিষদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এলোমেলো করে। এরপর স্থানীয়রা বাঁধা দিলে তারা আহত হয়।’
হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। জয় – ই মামুনের অনুসারীরা চেয়ারম্যানের পরিষদ এর ভিতর এর কার্যালয় ভাংচুর করেছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেহেতু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেহেতু এলাকার অনেকে আমাকে পছন্দ করেন। সেখানে বিএনপি আওয়ামী লীগ আর জামাত বলতে কিছু নেই।’
জেলা কৃষক দলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাঈদ বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদলকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখে এসেছি। বিষয়টি খুব দুঃখজনক। এই ঘটনায় বিএনপির অপর কোনো পক্ষ নেই। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম সরকার এবং তাঁর ভাতিজারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘বিকেল তিনটা পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে