১৯শে জুন, ২০২৫

জরিমানা সত্বেও বন্ধ হয়নি প্রতারণা।। আল-মানার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ফাঁদে নিঃস্ব রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুর মেডিকেল মোড় সংলগ্ন মেট্রো ল্যাবের গলিতে আল-মানার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অসহায় রোগীদের পরিক্ষা-নিরীক্ষার নামে
ভুয়া রিপোর্টে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সচেতন মহল ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ রোগীদের শরীর থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করলেও সেই নমুনা পরিক্ষা-নীরিক্ষা না-করে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ হাতিয়ে নেয় ডাঃ ফজলে রাব্বী। আর এসব রোগী অধিকাংশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসে হচ্ছে প্রতারণার শিকার।

যদিও এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক মাস ছয়েক আগে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা করলেও ঘটনার পর থেকেই পুনরায় চলছে অবৈধ এই কার্যক্রম। ফলে শত শত রোগী প্রতারণাসহ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। প্রতারণার শিকার নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার আরাজি চালুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মোতাহার হোসেনের ছেলে ফুলবাবু দীর্ঘদিন যাবত কিডনি রোগে আক্রান্ত,
গত ১৫ই ডিসেম্বর মোতাহার হোসেন তার ছেলেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়ার জন্য আসলে কথিত দালাল চক্র মোতাহারকে মেডিকেলের চিকিৎসা বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করে চটকে নিয়ে এসে ডাঃ ফজলে রাব্বীর চেম্বারে। সেখানে চিকিৎসা দেয়ার পূর্বে প্রায় ৪ হাজার টাকার পরিক্ষা নীরিক্ষা করানো হয়, সেই রিপোর্ট গুলো পরবর্তীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তারকে দেখানো হলে
যা সম্পূর্ণ ভুয়া রিপোর্ট বলে জানান রমেক ডাক্তার। পরে নতুন করে আবারো ফুলবাবুকে করাতে হয় পরিক্ষা-নীরিক্ষা। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম জানান,আমি গত শনিবার মেডিকেলে এসেই পড়ি দালালদের খপ্পরে তারা আমাকে আল মানাস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে এসে ডাঃ ফজলে রাব্বীকে দেখায়, এবং ডাঃ ফজলে রাব্বী অনেক গুলো টেস্ট দেয় পরিক্ষা নীরিক্ষার জন্য, এতে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়,তা কোনো উপকারে আসে নাই,পরে আবার নতুন করে মেডিকেলেই পরিক্ষা নীরিক্ষা করি। এমন প্রতিদিন এই প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার শিকার হয় অনেকেই।

এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ডাঃ ফজলে রাব্বীর লেলিয়ে দেয়া দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। প্রশাসনের অপতৎপরতার কারনে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গজে উঠেছে আল-মানার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া খুব জরুরী বলে তারা জানান।

তবে এবিষয়ে ডাঃ ফজলে রাব্বী দালাল চক্রের সাথে তার আঁতাতের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শুধু আমি নই এই ধাপ এলাকায় কমবেশি সবাই দালালদের চালায়। তবে পরিক্ষা নীরিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রয়োজনের বেশি অতিরিক্ত পরিক্ষা নীরিক্ষা করানো হয়না। আর অনুমোদনের ক্ষেত্রে, সিভিল সার্জন অফিসে টাকাসহ আবেদন করা হয়েছে।

এবিষয়ে সিভিল সার্জন কর্মকর্তা মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছি অভিযোগ পেলেই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন