শিউলি আফরোজ সাথী , মাগুরা :- মাগুরার চাঞ্চল্যকর ধর্ষিত শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ধর্ষণের অভিযুক্ত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ঘেরাও করে। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের ভায়না মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা স্লোগানে স্লোগানে ধর্ষকের ফাঁসির দাবি জানায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী কয়েক ঘন্টা নির্বিকার থাকে ছাত্রদের অবরোধ মুখে।
বিকেলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাগুরা কমিটির আহবায়ক প্রকৌশলী সেলিম, সদস্য সচিব হোসাইন, সমন্বয়কারী আব্দুর রাকিব ভায়না মোড়ে বক্তব্য রাখেন। তারা দাবি করেন শিশু ধর্ষণের তদন্ত রিপোর্ট দ্রুত দাখিল, দোষীদের জন সম্মুখে বিচার, দ্রুত ফরেন্সিক রিপোর্ট দাখিল, আইন পরিবর্তন করে দ্রুততম সময়ে ধর্ষণ মামলার বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি বেসরকারি হেলিকপ্টার যোগে মাগুরা স্টেডিয়ামে সদ্য ঘোষিত জাতীয় নাগরিক পার্টির হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিৎ আলম এবং হেফাজতে নেতা মামুনুল হক শিশু আছিয়ার জানাজায় অংশ নিতে উপস্থিত হয়েছেন।
ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল থেকে আছিয়ার মৃতদেহ নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার মাগুরা স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় পৌঁছেছে । সন্ধ্যা সাতটায় মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে ।
বিকেলে তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামে আছিয়ার মৃত্যুর খবরে শোকের মাতম দেখা যায়। বাড়িতে প্রতিবেশী গ্রামবাসী সহ আত্মীয়-স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়ে। প্রতিবেশীরা তার কবর খননের কাজ পার্শ্ববর্তী সোনাইকুন্ডি গোরস্থানে সম্পন্ন করেছেন।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আলী জানান, আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আসামিরা শিশুটির বড় বোনের শশুর মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামের হিটু শেখ (৪২), দুলাভাই সজীব শেখ (২২), তার বড় ভাই রাতুল শেখ ও রাতুলের মা জায়েদা খাতুন এখন পুলিশ হেফাজতে। এদিকে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত হিটু শেখের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ।
উল্লেখ্য, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার জারিয়া গ্রামের ৩য় শ্রেণীর ওই শিশু কয়েক দিন আগে আপন বোনের বাড়ি সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালি মাঠপাড়া গ্রামে বেড়াতে আসে। আসার পর থেকেই বোনের শশুর লম্পট হিটু শেখের কুনজরে পড়ে শিশুটি। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটি ঘুমিয়ে থাকলে ভোর রাতে কোন এক সময় শিশুটির গলা চেপে ধর্ষন করে।