৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

যুক্তরাজ্যের আদলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ার রূপরেখা দিলো বিএনপি

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচসি) আদলে বাংলাদেশে ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তুলতে স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই রূপরেখা উপস্থাপন করেন।

বিএনপির রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখায় ২৬তম ধারায় স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নীতির ভিত্তিতে উন্নত কল্যাণরাষ্ট্রে বিদ্যমান ব্যবস্থার আলোকে সবার জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছে বিএনপি।

স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবনা তুলে ধরে খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দারিদ্র বিমোচন না হওয়া পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত করবে। জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্ধ জিডিপির ৫ শতাংশের কম হবে না। প্রাথমিক ও প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত নারী-পুরুষ, পল্লী স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা করা হবে। সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগের চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণা সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আলোচনায় রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের বিবেচনায় রেখে সব পরিকল্পনা-নির্দেশনা ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এতে দেশে বিদ্যমান প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী ট্রেডিশনাল মেডিসিন, ইউনানি, আয়ুর্বেদী, হোমিওপ্যাথিক, কবিরাজী চিকিৎসা ব্যবস্থার অস্তিত্ব উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার অধিকতর উন্নয়ন, আধুনিকায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় গবেষণা ও বিবিধ সহায়তা সমান গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির প্রস্তাবনায় স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপক উন্নয়নে তিন ধাপে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ তুলে ধরে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের প্রস্তাবনায় স্বল্পমেয়াদি (এক থেকে তিন বছর) পরিকল্পনা রয়েছে। এতে আমরা গ্রামীণ স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগের ওপর ‍গুরুত্ব দিয়েছি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার গুণগত মান উন্নয়ন এবং কার্যকরী প্রাথমিক রেফারেন্স সেন্টার হিসেবে রূপান্তর, প্রয়োজনীয় বিশেষায়িত সেবা নিশ্চিত করা, পরিকল্পিত পরিবার ও জনসংখ্যার ব্যবস্থাপনার কথা আমরা বলেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক নাগরিককে একজন সরকারি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অধীনে রাষ্ট্রীয় খরচে সর্বোত্তম স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের পর্যায়ক্রমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিদ্যমান জেলা পর্যায়ের হাসপাতাল ও বিশেষায়িত স্তরের স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালীকরণ ও সঠিক রেফারেন্স সিষ্টেম বাস্তবায়ন করা হবে, ২৪ ঘণ্টা হেল্প লাইন, জরুরি চিকিৎসা সেবা, দুর্ঘটনা পরবর্তী সেবা, দ্রুত স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্যসেবায় ন্যায়বিচার, রোগী ও সেবা প্রদানকারীর জন্য সমতাভিত্তিক আইন প্রণয়ন, সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্ক উন্নয়নের কার্যকর ব্যবস্থা করা হবে।

এছাড়া ‘মধ্যমেয়াদি’ (এক থেকে পাঁচ বছর) এবং ‘দীর্ঘমেয়াদি’ (১০ বছর পর্যন্ত) পরিকল্পনার মাধ্যমে গোটা স্বাস্থ্যখাতে আমুল পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মন্তব্য করুন