অমর গুপ্ত, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
কলেজ শিক্ষার্থী হত্যাকান্ডের আসামী গ্রেপ্তার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে দিনাজপুরে সংবাদ সম্মেলন করলেন হতভাগ্য পিতা নির্মল চন্দ্র দাস। আজ রোববার (৫ জানুয়ারি) সকালে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর উপজেলার উমরপাইল গ্রামের শ্রী জগীন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী নির্মল চন্দ্র দাস।
এসময় তিনি দাবি করেন, গত ০৮/১২/২৩ ইং তারিখে তার কলেজ পড়ুয়া সন্তান শ্রী শ্রাবণ চন্দ্র দাস নিখোঁজ হয়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করি, কিন্তু কোথাও তাকে খুঁজে না পেয়ে অবশেষে দিনাজপুর কোতয়ালী থানায় নিঁখোজ হওয়ার বিবরণ তুলে ধরে একটি জিডি করেন,যার জিডি নং ৫৮১ তাং ০৯/১২/২৩ ইং। পুলিশের স্বার্থসিদ্ধির কর্মকান্ড ও দায়িত্ব অবহেলার কারণে নিখোঁজ হওয়ার গত একবছর অতিবাহিত হলেও কোতয়ালী থানা পুলিশ এখনো নিখোঁজ সন্তান শ্রাবণের কোনো হদিস বের করতে পারেনি।
তবে গত ১৮/১২/২৩ইং তারিখে বাড়ির পার্শ্ববর্তী আত্রাই নদীর চরে একটি মাথার খুলি উদ্ধার করে পুলিশ। ওই অজ্ঞাতনামা মানুষের মাথার খুলির বিষয়ে থানা পুলিশ বাদী হয়ে জিডি ও একটি মামলা করে। যার জিডি নং ১২৩৯ এবং মামলা নং ৫৩/৯২৯ । দীর্ঘ সময় পর গত ০৬/০২/২৪ ইং পুলিশ ওই অজ্ঞাতনামা মাথার খুলি নিখোঁজ শ্রাবণ চন্দ্র দাসের কিনা তা জানতে আমার সাথে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এস আই তৌহিদুল কোর্টে আবেদন করেন এবং ২৭/০৬/২৪ ইং ডিএনএ সেম্পল আমার সাথে মিলে গেলে পুলিশ জানায় নদীর চরে উদ্ধার হওয়া মাথার খুলিটি আমার ছেলে শ্রাবণ দাসের।
এরপর পুলিশ সিডিআর রেকর্ড এর ভিক্তিতে শ্রাবণের দুই বন্ধু মাদকাসক্ত রনি ও শিমুলকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাদের ২ দিনের রিমান্ডে নিলে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে নিবারণ নামে আরো একজনকে আটক করে পুলিশ। তদন্তে গড়িমসিসহ অজ্ঞাত কারণে পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে আটকদের কাছ থেকে কোনো ক্লু-ই বের করতে পারেনি। মামলা তদন্তে ৩জন এসআই পরিবর্থন হলেও মামলাটির কোনো সুরাহা হয়নি। হত্যভাগ্য পিতা হিসেবে আমি পুলিশ সুপার নাজমুল হাসানের সাথে দেখা বিচার চাই। কিন্তু তিনি আশ্বাস দিলেও তা সেখানেই থেমে থাকে। তারা আমাকে উদ্ধার হওয়া খুলি দিয়ে সতকার করেেত বলেছিল কিন্তু আমি তা করেনি। আমি বলেছিলাম গোটা দেহটা উদ্ধার করে দিন। কিন্তু তারা তাও পারেনি। একজন অসহায় পিতা হিসেবে সন্তানের নিখোঁজ হওয়ার জিডি করেছিলাম,কিন্তু পুলিশ সেই জিডিকে মামলা হিসেবে না নিয়ে নিজেরাই কেনো আমারা সন্তানের (উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত মানুষের মাথার) খুলির বাদি হলো তা আমি জানি না। আমরা আমাদের সন্তানের নিখোঁজ হওয়া ও হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার ব্যাপারে ইতিপূর্বেও সংবাদ সম্মেলন করে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবী করেছি কিন্তু আজো তা পাইনি। আমাদের কাছে পরিস্কার আমার সন্তান হত্যার সাথে জড়িতরা এলাকাতেই আছে, পুলিশ তৎপর হলেই তাদের আটক করা সম্ভব।
আমি প্রশাসনের কাছে আমার সন্তান শ্রাবন দাসের হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দাবী করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ চন্দ্র দাস, সুমন চন্দ্র দাস, অর্জুন দাস, সৌরভ দাস ও বিশ্বজিত দাস।