গত চার দিনে ১১২টি ট্রাকে তিন হাজার ২৪৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৭ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা।
মাসুদ বেপারী, স্টাফ রিপোর্টার:
পেঁয়াজ আমদানি করে বিপাকে পড়েছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা। গরমের কারণে পচন ধরায় ৫০ কেজির পেঁয়াজের বস্তা বিক্রি করছেন ২০০ টাকায়। আবার কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় ফেলে দিতে হচ্ছে। বাড়তি দামে আমদানি করে কম দামে বিক্রির ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।
আমদানিকারকরা বলছে, বন্দরে ভালো মানের পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৯৫ থেকে ১০২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যেগুলোতে পচন ধরেছে সেগুলো বন্দর থেকে বের করে নিজস্ব গুদামে নামিয়ে রেখেছেন। খারাপ মানেরগুলো ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর যেগুলোতে পচন ধরেছে সেগুলোর বস্তা ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে গতকাল ৩৪টি ট্রাকে ৯৯১ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
বন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুল করিম বলেন, ‘২০০ টাকায় পেঁয়াজের বস্তা কিনে বাছাই করে গ্রামের হাটগুলোতে বিক্রি করি। ১০-১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। তবে ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা। যেগুলো কিছুটা খারাপ সেগুলো ৬৫-৭০ টাকা।’
পেঁয়াজ কিনতে আসা মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘এক বস্তা পেঁয়াজ কিনলাম ২০০ টাকায়। বাসায় নিয়ে বাছাই করে যেগুলো একটু ভালো সেগুলো আলাদা করবো। বস্তায় ২০ কেজি ভালো বের হলে সেগুলো স্থানীয় হাটে বিক্রি করবো। আবার বাড়িতে খাওয়ার জন্য রাখব।’
বন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ভারতের যে স্থান থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে, এর দূরুত্ব অনেক বেশি। দেশে ঢুকতে ছয়-সাত দিন সময় লাগে। ট্রাকগুলো ত্রিপল দিয়ে ঢাকা থাকে। ফলে গরমে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে করে অনেক পেঁয়াজ ফেলে দিতে হয়। ভালোগুলো বন্দরে বিক্রি করতে পারলেও খারাপগুলো নিজস্ব গুদামে নিয়ে রাখছি। সেগুলো শ্রমিক দিয়ে বাছাই করে কিছু ভালো বের হলে অর্ধেক দামে বিক্রি করি। এবার বেশি পরিমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লোকসান হচ্ছে।’
একই কথা বলেছেন বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ও পেঁয়াজ আমদানিকারক নাজমুল হক। তিনি বলেন, ‘ট্রাকগুলো বন্দরে ঢুকতে বেশি সময় লাগছে। আবার দেখা যায়, কোনও কোনও ট্রাক আসার পথে বৃষ্টিতে ভিজলে পেঁয়াজগুলো পচে যাচ্ছে। এসব পেঁয়াজ গুদামে নামিয়ে বাছাই করে যেগুলো খাওয়ার উপযোগী সেগুলো কম দামে বিক্রি করছি। যেগুলো নষ্ট ফেলে দিচ্ছি। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছি আমরা।’
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা সফিউল ইসলাম বলেন, ‘গত চার দিনে ১১২টি ট্রাকে তিন হাজার ২৪৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৭ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা। টন প্রতি ৪১০ ডলারে এসব পেঁয়াজ আমদানি করছেন আমদানিকারকরা। যেহেতু এগুলো কাঁচা পণ্য, সেহেতু কাস্টমসের সব কার্যক্রম দ্রুত সমাধান করে পণ্যগুলো ছাড় করে দেয়া হচ্ছে।’