মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ০২:০১ পূর্বাহ্ন
খবরের আলো :
পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পলিথিনের বিকল্প পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ তৈরি করবে সরকার। পাটের সুক্ষ্ম সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে এই বিশেষ ধরণের ব্যাগ তৈরি করা হবে। পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগ তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমেদ খান।
বাণিজ্যিকভাবে এই ব্যাগ তৈরি করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি ফুটামুরা কেমিকেল লিমিটেডের সঙ্গে বিজেএমসির চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাটের তৈরি বিশেষ ধরনের এই সোনালি ব্যাগ মাটিতে ফেললে তা মাটির সঙ্গে মিশে যাবে। ফলে এর দ্বারা পরিবেশ দূষণ হবে না। এ ব্যাগ ব্যাপকভাবে তৈরি করতে পারলে দামেও সাশ্রয়ী হবে। এর মাধ্যমে পাটের ব্যবহার বাড়লে ন্যায্য দাম পাবে কৃষক।
মির্জা আজম বলেন, আমরা পাটের বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। ইতোমধ্যে ২৮৫টি পাটজাত পণ্য দেশে তৈরি হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রযুক্তির উদ্ভাবনকারী বিজ্ঞানী মোবারক আহমেদ খান বলেন, প্রথমে পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব পলিব্যাগ তৈরির উদ্দেশ্যে পাট থেকে সেলুলোজ আহরণ করা হবে। পরে ওই সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে অন্যান্য পরিবেশবন্ধব দ্রব্যাদির মাধ্যমে কম্পোজিট করে এই ব্যাগ তৈরি করা হবে। উৎপাদিত ব্যাগে ৫০ শতাংশের বেশিরভাগ সেলুলোজ বিদ্যামান। তাছাড়া এতে অন্য কোনো প্রকার অপচনশীল দ্রব্য ব্যবহার না হওয়ায় দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই এটি সম্পূর্ণরুপে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘শুধুমাত্র আমাদের দেশেই প্রতিদিন এ ধরণের ব্যাগের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৫০০ টন। ফলে এ ধরণের ব্যাগ তৈরি করে আমাদের দেশীয় চাহিদা মিটিয়েই অনেক বেশি অর্থ উপার্জন সম্ভব। পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যাগ তৈরি করতে পারলে তা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে সিনিয়র সচিব ফয়জুর রহমান বলেন, ‘আগে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরাসরি কাঁচা পাট রপ্তানি করতাম। আর এর থেকে পাটজাত পণ্য তৈরি করে তারা অনেক বৈদেশি মুদ্রা অর্জন করতো। এখন আমরা নিজেরাই পাটজাত পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করছি। আগের মতো আর কাঁচা পাট রপ্তানি করবো না।’
ফুটামুরা কেমিকেল লিমিটেডের কারিগরী সহযোগিতায় বিজেএমসি পাট থেকে সেলুলোজ উৎপাদনের মাধ্যমে সোনালি ব্যাগ প্রস্তুত আগামী ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে ব্যাপকভাবে শুরু করতে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে সই করেন বিজেএমসির পক্ষে সংস্থাটির সচিব এ কে এম তারেক এবং ফুটামুরা কেমিকেল লিমিটেড এর পক্ষে কোম্পানিটির জেনারেল ম্যানেজার গ্রিমি কোউলহার্ড।