খবরের আলো :
মো: শাকির অাহম্মেদ, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ে গত রবিবার সন্ধ্যা থেকে ময়লা ফেলতে বাঁধা দিচ্ছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। ফলে পৌর এলাকার ড্রেন ও বাসা বাড়ীর বাসিন্দাদের স্তুপকৃত ময়লা গত তিন দিন ধরে ভাগাড়ে ফেলতে পারেনি পৌরকর্তৃপক্ষ।
এমতাবস্থায় বাসাবাড়ীর ময়লা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পৌরবাসী। তাছাড়া উদ্ভুদ পরিস্থিতি নিরসনে কোনও মহল থেকে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। সোমবার ও মঙ্গলবার শহরের চৌমুহনা, উদয়ন স্কুল,থানা মসজিদের সামনে,স্টেশন রোড,হবিগঞ্জ রোড,পুরান বাজার,নতুনবাজার মাছবাজারসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আর এসব ময়লা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে,আন্দোলনকারীরা কলেজ সড়কের ময়লার ভাগাড়ের প্রবেশপথে বাশেঁর খুঁটি ও লম্বা বাঁশ দিয়ে বেড়া দিয়েছে। স্থানীয় এলাকা বাসী ও আন্দেলনকারীরা দিন রাতে সেখানে পাহাড়া বসিয়েছে। যাতে পৌরসভার ময়লা ফেলার গাড়ী সেখানে না নিয়ে যেতে পারে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ময়লার ভাগাড়ের প্রবেশপথে বাশেঁর খুঁটি ও লম্বা বাঁশ দিয়ে বেড়া দেয়া। বেড়া গায়ে বাশেঁর উপর ব্যানার টাঙিয়ে লিখা হয়েছে ‘১লা অক্টোবর ২০১৮ থেকে শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ,দি বাডস রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও মাদ্রাসার সম্মুখে ময়লার ভাগাড়ে পৌরসভার ময়লা ফেলা বন্ধ করুন। শিক্ষার্থীবৃন্দ,শ্রীমঙ্গল’।
এপরিস্থিতি সামাল দিতে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া কলেজ রোডস্থ নিজস্ব ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে পৌরসভার গার্ভেজ ফেলার জায়গাটি উন্মুক্ত করার জন্য সহায়তা চেয়ে গত ১ অক্টোবর শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করেন, ‘৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় পৌরসভার গার্ভেজ ট্রাক চালক দেবেন্দ্র সিং গাড়ি দ্বারা গার্ভেজ ফেলার জন্য গেলে অজ্ঞাত পরিচয়ে কিছু লোক গার্ভেজ ফেলতে বাধা প্রদান করেন। এমতবস্থায় গার্ভেজ ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। পৌরসভার ট্রাক চালক ও অফিস সহকারী থানায় গিয়ে অফিসার ইন-চার্জকে বিষয়টি অবহিত করেন। বর্তমানে শহরে গার্ভেজ ফেলা বন্ধ রয়েছে। এবং গার্ভেজের দুর্গন্ধে পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। অচিরেই শহরে আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতিসহ জনস্বাস্থ্যে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে’। চিঠিতে মেয়র আরো উল্লেখ করেন গত ২৩ সেপ্টেম্বর স্বারক নং শ্রী/পৌ/৪৭/১৮/৭৩০৭ মূলে জেরা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করা হয়। আসন্ন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দূর্গা পূজা সন্নিকটে তাই জরুরীভিত্তিতে এর সমাধান প্রয়োজন। যদি গার্ভেজ ফেলার কোন সমাধান না হয় শহরে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। এ চিঠির অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার সিনিয়র সচিব, সচিব, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেরা নির্বাহী অফিসার বরাবর দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান,‘অবস্থা তো খারাপ। রবিবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত কলেজ সড়কের ময়লার ভাগাড়ে পৌরসভার ময়লা ফেলার গাড়ী আটকিয়ে ফেরত দিয়েছে। ময়লা ফেলা ঠেকাতে সন্ধ্যা থেকে রাতে স্থানীয় বাসিন্দা ও আন্দোলনকারীরা পালাক্রমে পাহাড়া বসিয়েছে।
জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কেএম নজরুল বলেন, বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তাদের নির্দেশনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচও ডা: জয়নাল আবেদীন টিটো বলেন- আবর্জনার মশা-মাছি সাধারণত জন্মস্থান থেকে দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত দৌঁড়াতে পারে। এতে ডাস্টবিন থেকে সে রোগ জীবানু দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে পারে। খাদ্যনালির প্রদাহ তার অন্যতম এছাড়া ও ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস, টাইফয়েড ইত্যাদি ছড়ায়।