শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
মহিউদ্দিন আহমেদ ,শ্রীপুর (গাজীপুর )প্রতিনিধি: শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা কার্যক্রম। ১৯৫১ সালের ভাওয়াল রাজা কর্তৃক নির্মিত উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের একতলা ভবনে নেই কোনবিদ্যুৎ সংযোগ, দরজা-জানালার অবস্থায়ও খুবই জরাজীর্ণ। যে কোন সময় সেখানে বড় ধরণের কোন অঘটন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সেখানে কর্মরত উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. আলমগীর হোসেন জানান, তিনি একজন ডিপ্লোমাধারী কর্মকর্তা হিসেবে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। সেখানকার মেডিকেল অফিসারকে অন্যত্র প্রেষণে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের একমাত্র ফার্মাসিস্ট উত্তম কুমারকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বদলি করে নেয়া হয়েছে। আর অফিস সহায়ক আখের মিয়া মাসের অর্ধেক কাজ করেন বরমী স্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে, আর মাসের বাকি দিন কাজ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বর্তমানে তিনিই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একাধারে মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট এবং পিওনেরও কাজও করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৯৫১ সালের ১৫ই জুন ভাওয়াল কোর্ট অব ওয়ার্ডস এস্টেটর তৎকালীন ম্যানেজার মি.এ এম নাসির উদ্দিন ভবনটির উদ্বোধন করেন। ভবনটি নির্মাণের পর একবার সংস্কার কাজ করা হলেও বর্তমানে ছাদের ওপরে বটগাছসহ অন্যান্য পরগাছা জন্মে তাদের শেকড় ছাদের ভেতর দিয়ে ঢুকে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ভবনের ছাদ ও দেয়ালে ফাটল সৃষ্টি হওয়ায় অল্প বৃষ্টি হলেই মেঝেতে পানি ঢুকে পড়ে। দরজা জানালাগুলোও নড়বড়ে অবস্থা। বিভিন্ন জায়গায় পলেস্টারা ও দেয়ালের অংশ খসে পড়েছে। ভবনের এ দুরবস্থা কারণে স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের সংযোগও কেটে নিয়ে গেছে। এতে অন্ধকারাচ্ছন্ন হওয়ার আগেই ভবনের ভেতরে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। আর গরমের দিনে চিকিৎসক ও রোগীরা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। ভাঙ্গা জানালা ও দরজা দিয়ে চোরেরা এখান থেকে বিভিন্ন সময় ঔষধসহ বিভিন্ন মালপত্রও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব ব্যাপারে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিভাগে জানালেও অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা মো. মইনুল হক জানান, ওই উপকেন্দ্রটি স্থানীয়ভাবে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিয়ন্ত্রণাধীন। আমি বিষয়টি সাবেক সংসদ সদস্য, স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি ও বিভাগীয় পরিচালক, গাজীপুরের সিভিল সার্জন, হেলথ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবগত করেছি। তাদের সরেজমিনে দেখে প্রয়োজন হলে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে তা অন্যত্র সরানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ যাবত ওই ব্যাপারে কোন অগ্রগতি হয়নি। ফার্মাসিস্ট অবসরে চলে যাওয়ায় এবং অফিস সহায়ক সংকট থাকায় উপকেন্দ্র থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওই দুইজনকে আনা হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল অফিসারের প্রেষণ বাতিল করে আগের মেডিকেল অফিসারকেও ফেরত আনার আবেদন করা হয়েছে।
গাজীপুরের হেলথ এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের সহকারী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন বরমী উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশেই পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এটি উদ্বোধন হলেও তার কোন জনবল, আসবাব ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের কোন ব্যবস্থা হয়নি। জমি বা স্থান নির্দিষ্ট করে দিলেই নতুন ভবন স্থাপনের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে