রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০২:৫৯ অপরাহ্ন
আর মাইরেন না হুজুর, ও হুজুর। মা গো, ও মা গো বলে চিৎকার আর নিজেকে বাঁচানোর জন্য পিছু হটেও বিভৎস ও হিংস্র পিটুনি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেনি তাওহীদ!
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোতা-কাহিনী’ পড়েছেন? রাজা তাঁর মন্ত্রীকে ডেকে বলেন, ‘পাখিটাকে গান শিক্ষা দাও।’ তোতা পাখিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রথম একটা খাঁচা বানানো হলো। সোনার খাঁচা। তারপর চেষ্টা চলতে লাগল সেই খাঁচাটার উন্নতি সাধনের। আর খাঁচায় ‘দানা নাই, পানি নাই, কেবল রাশি রাশি পুঁথি হইতে রাশি রাশি পাতা ছিঁড়িয়া মুখের মধ্যে ঠাসা হইতেছে। গান তো বন্ধই, চিৎকার করিবার ফাঁকটুকু পর্যন্ত বোজা।’
তারপর সেই দুঃখের লাইনটা রবীন্দ্রনাথ নিরাবেগে বলে গেছেন, ‘পাখিটা মরিল।’
২০১৮,৩ মার্চ পাষন্ড হুজুরের হিংস্র পেটানোর আঘাতে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকোলে ঢলে পড়লো মাদ্রাসার কমলমতী সে ছাত্র।
খবরপত্রে দেখলাম,মানুষ রূপি সে মাদ্রাসা শিক্ষককে ভালুকা থানার ওসি মামুন অর রসিদ পিপিএম এর অক্লান্ত পরিশ্রমে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং সে গ এক বছর এখনো হাজতে আছেন।
একজন বাবা মা আর তার আদরের ধন কলিজার টুকরা সন্তানকে সু- শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য নিজের আদর সোহাগ থেকে বঞ্চিত করে মাদ্রাসা কিংবা স্কুলের হোস্টেলে পড়াশুনার জন্য দেয়। কিন্তু এ কি হচ্ছে?যেখানে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্কে, বিদ্যা যে দেবে এবং বিদ্যা যে নেবে তাদের উভয়ের মাঝখানে যে সেতু সেই সেতুটি হচ্ছে ভক্তি-স্নেহের সম্বন্ধ হওয়ার কথা। সেই আত্মীয়তার সম্বন্ধ না থেকে যদি কেবল শুষ্ক কর্তব্য বা ব্যবসায়ীক কিংবা পিটিয়ে জোর করে গুলিয়ে খাইয়ে দেয়ার সম্বন্ধই থাকে তাহলে যারা সে শিক্ষা পায় তারা হতভাগ্য, যারা দেয় তারাও হতভাগ্য।’
প্রিয় স্যার কিংবা হুজুর আপনাদের বলছি, কমলমতী ছাত্রদেরকে শাসনের নামে এভাবেই পিটিয়ে ওপারে পাটাবেন না। অনেক কষ্টের সন্তান। যার সন্তান সে কখনো সন্তানের গায়ে একটি ফুলের টুকাও দেন নি।আপনার সন্তানকে যেরকম স্নেহ, মায়া দিয়ে বড় করেন এই সন্তান গুলো কেনো আপনাদের কাছে ব্যাতিক্রম?আপনার সন্তান হলে কি তা পারতেন?আপনার সন্তান যদি অন্যের হাতে আঘাতে আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে আপনার কোলে লাশ হয়ে ফিরে আসে তখন কতটুকু ব্যাথা পাবেন?একজন পিতার কাছে এর চেয়ে ভারাক্লান্ত দুঃখ আর কি হতে পারে?
যায় হোক, গ্রেফতার কৃত লোকটি ই নয়,যারা যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘৃন্য কাজ করে সকল পিশাচের কঠিন শাস্তি চাই।একজন শিক্ষক কিংবা হুজুর হিসেবে নয়। একজন পিশাচ, হিংস্র পাষন্ডতার বিচার হোক।আর সেটা যত কঠিন হবে তত খুশি হবো!,,,,,,সুএ ফেইজবুক