শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১, ০৮:৩০ অপরাহ্ন
খবরের আলো :
মহিউদ্দিন আহমেদ,শ্রীপুর( গাজীপুর) প্রতিনিধি: রানা আহমেদ ও খাদিজা আক্তার দম্পতি’র বিয়ের বয়স সাত বছর। সংসার জীবনে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান এসেছিল তাদের কোলজুড়ে। খোলা মাঠে সেফটি ট্যাংকি ঢেকে না রাখাই পাঁচ বছর বয়সেই সুন্দর পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সুমাইয়া নামের শিশুটিকে। আদরের কন্যা সন্তানটি এবছর আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আর কখনো বিদ্যালয়ে যাবেনা সুমাইয়া।
গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়াচালা গ্রামে সেফটি ট্যাংকে গর্তে পড়ে এক শিশু নিহয় হয়েছে। ১২ এপ্রিল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় সেফটি ট্যাংকে পড়ে গিয়ে সুমাইয়া আক্তার (৫) এক শিশু নিহত হয়েছে। নিহত শিশু স্থানীয় রোটারি মডেল স্কুলের প্লে শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
নিহত সুমাইয়া ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার পাকাটি গ্রামের রানা আহমেদ’র কন্যা। বর্তমানে রানা আহমেদ গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়াচালা গ্রামের খোরশেদ আলমের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।স্ত্রী-সন্তান ভাড়া থেকে রানা স্থানীয় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় চাকরি করেন।
স্থানীয়রা জানান, মোশারফ হোসেন দুলালের ভাড়া দেয়া বাড়ির সেফটি ট্যাংকে পড়ে শিশুটি মারা যায়। সেফটি ট্যাংকের পাশে খোলা মাঠ থাকায় সেখানে শিশুটি খেলতে গেলে হঠাৎ সেফটি ট্যাংকিতে পড়ে যায়। শিশুটির মা খুঁজতে খুঁজতে দেখে সেফটি ট্যাংকের ময়লা পানিতে ভেসে রয়েছে। পরে ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘের বাজার কাজী হাসপাতাল, পরে মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতাল, পরবর্তীতে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটি মারা গিয়াছে।
শিশুটির মা খাদিজা আক্তার বলেন, খোলা পরিবেশে সেফটি ট্যাংকি ঢেকে না রাখার কারণে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমার একটা মাত্র সন্তান ছিল। আমার সবশেষ, আর কোন সন্তান যেন এভাবে বাবা মায়ের বুক খালি না করে । এরকম মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর। কিছুদিন আগেও এই সেফটি ট্যাংকিতে পড়ে গরু,ছাগল, কুকুরসহ অনেক কিছু মারা গেছে। তারপরও এই সেফটি ট্যাংকি ঢেকে রাখেনি পাশের বাড়ির মালিক মোশারফ হোসেন দুলাল। তার গাফিলতির কারণেই আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।
এই সংবাদ লিখা পর্যন্ত নিহতের পরিবার থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে নিহতের পরিবারের কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য প্রক্রিয়া চলছে।