শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০১:৪০ অপরাহ্ন
খবরের আলো :
ইসবগুল মানবদেহের জন্য খুবই উপকারি। ইসবগুলের ভুষি কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অ্যাসিডিটি, পাইলস প্রতিরোধ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। ওজন কমানো, পরিপাক ক্রিয়ার উন্নতি, হার্টের সুস্থতায় এর ব্যবহার খুবই প্রশংসিত। উচ্চমাত্রার ফাইবার সমৃদ্ধ এই খাবারটি দূর করে শরীরের নানান সমস্যা।
জেনে নিন ইসবগুলের কিছু অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য নিরাময়ে ইসবগুলের ভুষি অতুলনীয়। যারা নিয়মিত কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা প্রতিদিন ইসবগুলের শরবত খেলে উপকার পাবেন। তবে এক্ষেত্রে ইসবগুল পানিতে অনেকক্ষণ ভিজিয়ে না রেখে পানিতে মেশানোর সাথে সাথেই খেয়ে ফেললে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
যারা অ্যাসিডিটির সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন, তাদের জন্য ইসবগুলের ভুষি হতে পারে এই অবস্থার ঘরোয়া প্রতিকার। ইসবগুল অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হওয়ার সময়টা কমিয়ে আনে। প্রতিবার খাবার পর ২ চামচ ইসবগুল আধা গ্লাস ঠাণ্ডা দুধে মিশিয়ে পান করুন। এটি পাকস্থলীতে অত্যাধিক এসিড উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমায়।
প্রচুর তেল-ঘি যুক্ত খাবার খাওয়া হয়েছে বলে কোলেস্টেরল বেড়ে গিয়েছে? অথবা হৃৎপিন্ডে দেখা দিচ্ছে নানান সমস্যা? নিয়মিত ইসবগুল-এর শরবত খাওয়ার অভ্যাস করে ফেলুন। প্রতিদিন ইসবগুলের শরবত খেলে হৃৎপিন্ড ভালো থাকে এবং রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
অনেকেই আছেন একটু বেশি খেয়ে ফেললেই খাবার হজম করতে হিমশিম খান। কিংবা একটু তেলে ভাজা খাবার খেলেই গ্যাস্টিকের সমস্যায় অতিষ্ট হয়ে যায় জীবন। যাদের হজম সংক্রান্ত সমস্যা আছে তারা নিয়মিত ইসবগুলের শরবত খেলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও দূর হয়ে যায় নানান রকমের হজমের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, গ্যাস ও আলসারের সমস্যা।
যাদের ডায়াবেটিস আছে, ইসবগুলের ভুষি তাদের জন্য খুবই ভালো। এটি পাকস্থলীতে যখন জেলির মত একটি পদার্থে রূপ নেয় তখন তা গ্লুকোজের ভাঙন ও শোষণের গতিকে ধীর করে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। খাবার পর নিয়মিতভাবে দুধ বা পানির সাথে ইসবগুলের ভুষি মিশিয়ে পান করুন ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে।
পায়ুপথে ফাটল এবং পাইলসের মত বেদনাদায়ক সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদেরকে চিকিৎসকগণ ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ইসবগুলের পানীয় মলকে নরম করতে সাহায্য করে অন্ত্রের পানিকে শোষণ করার মাধ্যমে এবং ব্যাথামুক্ত অবস্থায় তা দেহ থেকে বের হতেও সাহায্য করে। ২ চামচ ইসবগুল কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ঘুমাতে যাবার আগে পান করুন।
ইসবগুল ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে জাদুকরী একটি উপাদান। ইসবগুলে আছে প্রচুর ফাইবার। ইসবগুল খেলে উচ্চমাত্রার ক্যালরীযুক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও কমে যায়। ফলে ওজনটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ওজন কমানোর জন্য ইসবগুল খেতে চাইলে পানিতে এক চা চামচ করে ইসবগুল মিশিয়ে তিন বেলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। তবে শরবতে চিনি ব্যবহার করবেন না।
পাইলসের মত গুরুতর রোগে শুধু ইসবগুলের উপর নির্ভর না করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ আগে নেয়া উচিত। এরূপ রোগের পথ্য হিসাবে ইসবগুলের উপর নির্ভর করা ঠিক হবে না।