সোমবার, ১২ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
খবরের আলো :
কৃষ্ণ কুমার শুভ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কৃতি সন্তান বরেণ্য কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ নেত্রকোনা শহরে মাঝে মধ্যে আসলেও নেত্রকোনার মাটিও মানুষের সঙ্গে তার ছিল এক নিবিড় যোগাযোগ। তিনি নেত্রকোনার ভাষা বা আঞ্চলিক কথা ও শব্দকে তার উপন্যাস এবং নাটকে উপস্থাপন করে নেত্রকোনাকে পরিচিত করে তুলেছিলেন বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে। তিনি তার নিজ গ্রাম পৈতৃকভ‚মি কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে একটি স্কুল স্থাপন করে গেছেন। প্রথমে এটি তার বাবার নামে দিলেও পরে ৭১ এর শহীদদের স্মরণে তার নামাকরণ করেছেন শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ।
এই বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের তিনিই বেতন ভাতা দিতেন। এখানে তিনি একটি বহুমুখী আদর্শ কলেজ ও উচ্চ শিক্ষা গবেষণা কেন্দ্র করতে চেয়েছিলেন। তার আগেই মৃত্যু তাকে কেড়ে নিল পৃথিবী থেকে। হুমায়ুন আহমেদের স্থাপিত স্বপ্নের বিদ্যালয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে জানান তার স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম উৎসাহভরেই চলছে। ১৯৯৬ সনে ৩ একর জমিতে প্রতিষ্টিত এই বিদ্যালয়টি ষষ্ট শ্রেণি থেকে শুরু হলেও এখন এটি দশম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। কিন্তু আজো এমপিওভুক্ত হয়নি। তাই এই বিদ্যাপীঠের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই এখন এটিতে এমপিও ভুক্ত করার পাশাপাশি প্রয়াত স্বনামধন্য লেখক, স্যার হুমায়ূন আহমেদের সম্মানে এবং স্মরণে সরকারীকরণের দাবী উঠেছে এলাকা থেকে। অনেকেই বলছেন, তার কবর দেবার আগেই শিক্ষামন্ত্রণালয় এটিকে সরকারী করনের ঘোষনা আসার কথা ছিল।
হুমায়ুন আহমেদের দ্বিতীয়া স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন জানান, শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। এখান থেকে এলাকার শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাবে। তার এ লালিত স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেনি সে। হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুর পর থেকে আমি শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান সহ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। গেল সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্ত শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিদ্যালয়টিকে এমপিওভূক্ত করার প্রতিশ্রতি দিয়েছিলেন। এখন পর্যন্ত সে প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়িত হয়নি। আশা করি বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী সে প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন করবেন। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি কী করে বিদ্যালয়টিকে ঘিরে হুমায়ুন আহমেদের রেখে যাওয়া স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারি। এটিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে এলাকার একটি মডেল শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে দাঁড় করাতে পারি।