শনিবার, ০৬ মার্চ ২০২১, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন
খবরের আলো :
মিঠুন বসাক, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে নদী ভাঙনে বিধ্বস্ত চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ ধরার দায়ে গত ২ সপ্তাহে ৭১ মৎস্যজীবীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া অভিযানে ২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং সাড়ে ৫শ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে।
মৎস্য অফিস ও স্থানীয়রা জানায়, চৌহালীর উত্তরে বোয়ালকান্দি ও দক্ষিণে পাথরাইল এবং পশ্চিমে এনায়েতপুর পর্যন্ত যমুনা নদীর প্রায় ২৮ কিলোমিটার বিশাল এলাকায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে দ্রæতগতির নৌযান নিয়ে জেলেরা জাল ফেলে মা ইলিশ ধরছে। তাদের জালে ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা রুপালী ইলিশ।
দেশব্যাপী ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ আহরণ, বিপণন ও পরিবহণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আগে থেকেই উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের জেলেদের নিয়ে সভা সেমিনার করে সচেতন করা হয়েছে। এছাড়া অসহায় দরিদ্র জেলেদের মধ্যে সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত বিশেষ সহায়তার চাল বিতরণ করা হয়। তারপরও যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত কিছু জেলে ও অতিলোভী মৎস্যজীবি সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ আহরণে নদীতে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য অফিসের করা টহল ফাঁকি দিয়ে সুযোগ বুঝে মা ইলিশ ধরছে।
ইতোমধ্যে মা ইলিশ ধরার অপরাধে গত ১৪ দিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৭১ মৎস্যজীবীকে আটক করে ৪৮ জনকে ১৫ দিন করে ও ২৩ জনকে ৭ দিন করে বিনাশ্রম কারাদÐ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় আড়াই লাখ টাকা ম‚ল্যের ২ লাখ ২৫ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং জব্দকৃত সাড়ে ৫শ কেজি মা ইলিশ স্থানীয় এতিম খানায় বিতরণ করা হয়েছে বলে মৎস্য অফিস সুত্র জানিয়েছে।
এবিষয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউপি রাশেদুল ইসলাম সিরাজ জানান, যমুনা চরের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশা মৎস্য শিকার। দারিদ্রতা ও অসচেতনতার কারণে নিষিদ্ধ সময়েও অনেকই মাছ ধরছে। তবে প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জেলেদের মধ্যে সরকারী সহায়তা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সম্পদ রক্ষায় জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তবে উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, বিশাল যমুনা নদীতে একদিকে অভিযান চলছে অন্যদিকে কিছু অসাধু জেলে মাছ ধরছে। তবে এটা বিগত বছরের তুলনায় অনেক কমে গেছে।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আনিছুর রহমান বলেন, ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের জন্য আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করে পুলিশ ও মৎস্য অফিস যৌথভাবে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। ১৪ দিনে ৭১ জেলেকে সাজা প্রদান ও ২ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।