সোমবার, ০১ মার্চ ২০২১, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
খবরের আলো :
শেখ আমিনুর হোসেন,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ : সাতক্ষীরা সদরের আগরদাঁড়ী ও আলীপুর ইউনিয়নের ৭.২৫ কিলোটামিটার রাস্তার দুই ধারে ৪ হাজার ৬ শ তালবীজ রোপনের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা সামাজিক বন বিভাগের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের পাঁচটি উপূকলীয় জেলায় বনায়ন শীর্ষক প্রকল্প আওতায় ওই তালবীজ রোপন করা হয়। সদর উপজেলার আগরদাঁড়ী ইউনিয়নে ৪ কিলোমিটার ও আলীপুর ইউনিয়নে ৩.২৫ কিলোমিটার তালবীজ লাগানো হয়। অতি উপকারী এই গাছটি সার্বিক দিক বিবেচনা করে দেশে আরো বেশী করে তাল গাছ লাগনোর পরিকল্পনা নেয় সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা জেলায় এবার প্রায় ১২ কিলোমিাটার তালগাছ লাগানো হয়েছে।
তালগাছ একটি বহুমুখী উৎপাদানশীল গাছ। তাল গাছ বজ্রপাত নিরোধ সহায়ক গাছ। এই গাছ থেকে জ্বালানী কাঠ পাওয়া যায়। রস পাওয়া যায় । যা প্রাকৃতিক মিঠা পানীয় হিসাবে পান করা যায়।রস জ্বালিয়ে গুড় পাওয়া যায়। তাল মিসরী তৈরী হয়।পরিপক্ষ ও অপরিপক্ষ তাল শ্মাশ অধিকাংশ মানুষের প্রিয়। তাল গুড় দিয়ে বাহারী আইটেমের পিঠা পুলি তৈরী করা হয়। তালপাতা দিয়ে বাঁশি ও হাতপাখা তৈরী হয়। বসার জন্য বিভিন্ন প্রকার চাটাই তৈরী হয়। তালকাঠ গৃহস্থলীর কাজেও ব্যবহার করা হয়। যা বহু মুল্যবান। তালপাতা গোড়ার অংশ (স্থানীয় ভাষায় বেগু বলা হয়) দিয়ে আঁশ (চোচ) বের করে ঘুনি তৈরী করা হয়। টুুপি তৈরী করা হয়। বিভিন্ন প্রকার খেলনা ও শোপিচ তৈরী করা যায় । তাল গাছের গুড়ি দিয়ে সিঙ্গল জলজ বাহনও তৈরী হয়।
সাতক্ষীরা সদরের আগরদাড়ী ইউনিয়নের কুচপুকুর, বাবুলিয়া ও বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় মেঠো রাস্থার ধারে মোট ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে ২৬শ’ তালবীজ রোপন করা হয়। সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের ঘোনা ,মাহমুদপুর ও ভাড়ুখালী এবং কুলপুতা থেকে তালবেড়ী পর্যন্ত মোট ৩.২৫ কিলোমিটার রাস্থার দু পাশ্বে দুই হাজার তাল বীজ লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। সম্প্রতি আলীপুর ইউনিয়েনের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্থাফিজুর রহমান ছোট তালবীজ রোপন উদ্বোধন করেন। পর্যায়ক্রমে ৩.২৫ কিলোমিটার তালবীজ রোপন সোমবার শেষ করা হয়েছে। আলিপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বলেন ,তালগাছ একটি বহু মুখী উপকারী গাছ। যা রাস্থার ধারে লাগালে ফসলের অনেক ক্ষতি কম করে। তিনি আরো জানান,তার ইউনিয়নে যে সমস্থ জায়গায় তাল গাছ লাগানোর সুযোগ আছে সে সমস্থ জায়গায় লাগনোর জন্য তিনি সহযোগিতা করবেন।
জেলা সামাজিক বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি এম মারুফ বিল্লাহ জানান, তালগাছ একটি বহুমুখী উৎপাদলশীল গাছ। এই গাছ থেকে রস, গুড় ও কাঠসহ অনেক সুবিধা আমরা পাই। তাই তাল গাছ লাগালে আমরা অনেক উপকার ভোগ করতে পারব। গৃহস্থলী ও খাদ্যের উপকরন হিসাবে অনেক পন্য উৎপাদিত করতে সক্ষম হবো। তিনি আরো জানান, জনবল সংকটের কারনে আমরা গাছ লাগানোর স্থান নির্বাচন করতে অনেক কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। সাংবাদিক এম এ নেওয়াজ মিনাল নিজ উদ্যোগে অর্থ, শ্রম ও সময় ব্যয় করে আমাদের কাছে বিভিন্ন ইউনিয়নের তালগাছ লাগানোর মতো কিছু রাস্তার খসড়া তালিকা দেন। আমরা সেটা যাচাই করে সমর্থ অনুযায়ী প্রায় ৪ হাজার ৬ শ বীজ এবং ৭.২৫ কিলোমিটার তালবীজ তার তত্বাবধানে রোপন ইতোমধ্যে সুসম্পন্ন করেছি । আগামীতে আরো ১০ কিলোমিটার রাস্থার পাশে বিভিন্ন গাছ লাগানোর প্রস্তাব পেয়েছি।