শেখ আমিনুর হোসেন,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একদিনের ব্যবধানে আবারো ৪ বছরের এক কন্যা শিশু যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় এক কিশোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। থানায় মামলা হয়েছে আর ভূক্তভোগী শিশু কন্যাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আটককৃত কিশোর উপজেলার কাঁকডাঙ্গা গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে ও আজিজুলের দৌহিত্র রাসেল হোসেন (১৪)। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামে।
কাঁকডাঙ্গা মোড়ের বাসিন্দা ভূক্তভোগি শিশু কন্যার চাচা ইসমাইল হোসেন জানান, মঙ্গলবার দুপুরের খাওয়ার পর বাড়ির আঙিনায় খেলা করছিল ৪ বছরের এক কন্যা শিশু। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রক্তক্ষরণ অবস্থায় কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে তার মাকে জানায় যে, রাসেল (১৪) তাকে ভুলিয়ে পার্শ্ববর্তী টেন্টির পুকুর এলাকার বাগানে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে পালিয়ে যায়। একথা শুনে স্বজনসহ স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক বখাটে রাসেলকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়।
সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার ও কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মারুফ আহম্মদ ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করেন এবং জনতার কর্তৃক আটককৃত ধর্ষক রাসেলকে কলারোয়া থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করা হয়। পরে ভূক্তভোগি শিশুকে জেলা পুলিশের সহযোগিতায় সাতক্ষীরার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু কন্যার পিতা জানান, ‘আমি জীবিকা নির্বাহের জন্য ভোমরায় ছিলাম। ফোনে বিষয়টি জানতে পেরে বাড়িতে আসি। আমার মেয়ে উঠানে খেলা করার সময় রাসেল তাকে ভুলিয়ে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে। আমার বাচ্চা মেয়েটি এখন অসুস্থ। আমি এর ন্যায্য বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে ৫নং কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম আফজাল হোসেন হাবিল জানান, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। তারা উভয়েই অপ্রাপ্তবয়স্ক। ভিকটিমের মেডিকেল চেকআপের পর সত্যতা জানা যাবে। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহম্মদ জানান, সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের মাধ্যমে ভিকটিমকে সাতক্ষীরার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। আটককৃত কিশোরের বিরুদ্ধে রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়েছে। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার জানান,আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা ভিকটিমকে সাতক্ষীরার ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেছি। তার চিকিৎসা চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আটককৃত ধর্ষক রাসেলকে বুধবার সকালে জেলা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি অবহিত করেন। এ দিকে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযুক্ত রাসেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ছেলেটি ক্লাস ৭ম পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। এখন ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। সে বদ টাইপের ও তার স্বভাব চরিত্র ভাল না। উল্লেখ্য, সোমবার (৫নভেম্বর) কলারোয়ার কুশোডাঙ্গা ইউনিয়নের পাঁচ ধানঘোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন নিপীড়ণের শিকার হয়। ওই ঘটনায় প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেনকে আটক করে পুলিশ জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।