মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই ২০২২, ০৪:০০ অপরাহ্ন
শেখ আমিনুর হোসেন,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলার সব কয়টি আসন এক সময়ে জামায়াতের দুর্গ হিসেবে খ্যাত ছিল। বর্তমানে এধারাকে পরিবর্তন করে আওয়ামীলীগ পুরোপুরি না হলেও মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। সাতক্ষীরা-২ সদর আসনে আওয়ামীলীগকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দলীয়়় নেতাকর্মীদের মধ্যে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সাতক্ষীরা জেলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সবচেয়ে প্রাণপ্রিয় আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম। এদিকে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে তাকে ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবির চক্র ও তাদের সহযোগীরা।
সাতক্ষীরা-২ (সাতক্ষীরা সদর) আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম যাতে দলীয় মনোনয়ন না পান, সেজন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে জামাত-বিএনপি। আর এজন্য পর্দার আড়ালে থেকে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার ও তার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া প্রতিপক্ষের পিছনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে স্থানীয় জামাত-শিবির চক্র ও তাদের দোসর একটি প্রভাবশালী মহল। নজরুল ইসলামের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি, সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা এবং বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী আওয়ামী লীগ ক্রমান্বয়ে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে জামাত-বিএনপি। নজরুল ইসলামের মত সৎ, সদালাপী, জনপ্রিয় এবং স্বচ্ছ ইমেজের নেতা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সাতক্ষীরা জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতি অনেক বেশি সংগঠিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত ভূমিকার কারণে ঘাপটি মেরে থাকা জামাত ভবিষ্যতে সাতক্ষীরার রাজনীতিতে গুরুত্ব হারাবে এমন আশঙ্কায় আতঙ্কিত জামাত। ১৯৭৫ এর ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার পর খুনী চক্র সারাদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে। খন্দকার মোস্তাকের দোসররা সারাদেশে রাতারাতি ভোল পাল্টিয়ে ফেলে। সাতক্ষীরাতেও সেসময় আওয়ামী লীগকে কোনঠাসা করে ফেলে চক্রটি। সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া আওয়ামীলীগের সেই দুর্দিনে অনেকেই মাঠ ছেড়ে পালান। দীর্ঘদিন তারা সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ও জেলা শহরে আওয়ামী লীগের কোন মিছিল-মিটিং বা সাংগঠনিক কোন কার্যক্রমেই অংশ নেননি। আশাশুনি উপজেলা থেকে ফিংড়ী ইউনিয়ন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অন্তর্ভূক্ত হওয়ার পর তৎকালীন ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে থাকেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ১৯৮৪ সাল থেকে দীর্ঘদিন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নজরুল ইসলামকে প্রথমবারের মত সাতক্ষীরা-২ আসনে নৌকা প্রতীক দিয়ে মনোনয়ন দেন। স্বল্পতম সময়ে ব্যক্তিগত সততা, গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তার কারণে নজরুল ইসলাম যখন নির্বাচনে জামাত ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। পরাজিত হলেও নজরুল ইসলাম কখনও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগ করেননি তিনি ক্রমান্বয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তৃণমূল পর্যায়ের সকল স্তরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করায় মনোনিবেশ করেন। ফলশ্রতিতে ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলের মাধ্যমে তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সাতক্ষীরা-২ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেন।
২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দলীয় কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে তিনি জেলার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৫’র পর সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগকে পুনর্জীবিত করে নজরুল ইসলাম সকল উপজেলায় দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সায়ীদ বলেন, “সবাই জানে নজরুল ইসলামের সততা, দলীয় আনুগত্য ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কারণে সাতক্ষীরায় তৃণমূলের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা তার পিছনে ঐক্যবদ্ধ। আমরা চাই সৎ নেতা, মাঠে থাকা নেতা যেন দলীয় নৌকা পান। আর নজরুল ইসলামের চেয়ে জনপ্রিয় এবং কর্মীবান্ধব নেতা কে আছেন?”