শনিবার, ২১ মে ২০২২, ০২:৪৯ পূর্বাহ্ন
জনি আহমেদ, চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় পপি খাতুন (২৬) নামের এক যুবতী গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৫ দিন ধরে স্বামীর বাড়ী থেকে নিখোঁজের পর আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের কারিগরপাড়া মাঠ সংলগ্ন মাথাভাঙ্গা নদী থেকে সোমবার (২৪ জানুয়ারী) নদীর পানি থেকে ভাসমান অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করে আলমডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়া ফাঁড়ি পুলিশ।
সেসময় লাশের গলায় দাগের চিহ্ন দেখা গেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- ধর্ষণ শেষে পপিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ নদীর পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। পরে লাশ ভেসে উঠলে গ্রামবাসীর নজরে আসে।
খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই গৃহবধূর স্বামী ও প্রতিবেশী ব্যবসায়ীক পার্টনার এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পপি খাতুন জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি গ্রামের নূর ইসলাম ভোলার মেয়ে।
স্বামী তুহিন (৩২) একই উপজেলার নগরবোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
এ ব্যাপারে পপির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, (১৯ জানুয়ারী) বুধবার নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে গত (২৩ জানুয়ারী) রোববার আলমডাঙ্গায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরীও করেন পপির পিতা।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর আগে নগরবোয়ালিয়া গ্রামের অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন যুবক তুহিন আলীর (৩২) সাথে পপি খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে মিম আক্তার (৯) নামের একটি শিশুকন্যা রয়েছে।
প্রতিদিনের মত গত (১৯ জানুয়ারি) রাতে ঘুমিয়ে পড়েন সবাই। রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় স্বামী তুহিন আলীর। সেসময় তাকিয়ে দেখে বিছানায় তার স্ত্রী পপি খাতুন নেই। তারপর থেকেই পপি নিখোঁজ হয়ে যায়। টানা ৫ দিন পর বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে পপির লাশ পানিতে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পায় গ্রামবাসী। সেসময় ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
তবে লাশ উদ্ধারের পর গৃহবধূর শিশুকন্যা মিম (৯) মায়ের লাশ শনাক্ত করে। সে সময় লাশের গলায় লাল দাগের চিহ্ন ও জিহ্বা মুখ থেকে বেরিয়ে ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
এ মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার প্রতিবেশি যুবক ঝন্টু আলীকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে এলাকাবাসীরা জানায়, নিহত গৃহবধূর স্বামী অল্প বুদ্ধিসম্পন্ন। তবে গুঞ্জন উঠেছে প্রতিবেশি মাছ ব্যবসায়ী যুবক নেক আলীর সাথে গৃহবধূর অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। লাশ উদ্ধারের পর থেকে নেক আলী নিরুদ্দেশও রয়েছে। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনে বার বার রিং করেও পায়নি স্থানীয়রা। মোবাইলফোনসেট বন্ধ ছিল। এ বিষয়টিও পুলিশ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) তুহিনুজ্জামান জানান, প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে গৃহবধুকে হত্যা করা হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর সঠিক তথ্যানুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।