শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন
খবরের আলো :
শেখ আমিনুর হোসেন,সাতক্ষীরা ব্যুরো চীফ: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের সীমান্তবর্তী সাতক্ষীরা জেলা শহরে প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত দুই সাংবাদিকের বাড়ির সামনে গভীর রাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মহড়ায় উদ্বিগ্ন সাতক্ষীরা শহরের সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ। এ ঘটনায় রবিবার সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন সাংবাদিক হাফিজুর রহমান মাসুম। শুক্রবার বাংলাদেশে-ভারত এশিয়া কাপ ফাইনালের শেষে রাত প্রায় আড়াইটার দিকে শহরের পলাশপোল তেঁতুলতলা এলাকায় সাবেক এমপি মরহুম এড. এ.এফ.এম এন্তাজ আলীর পুত্র দৈনিক কালের চিত্রের মফঃস্বল বার্তা সম্পাদক মেহেদী আলী সুজয় ও অনলাইন নিউজপোর্টাল ডেইলি সাতক্ষীরার সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুমের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার ভুক্তভোগী সাংবাদিক মেহেদী আলী সুজয় জানান, তিনি প্রতিদিনের ন্যায় পত্রিকা অফিসের কাজ শেষে রাত আড়াইটার দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়িতে প্রবেশের সময় তিনি দেখতে পান তার বাড়ির পাশে খালি গায়ে কেউ বসে আছেন। তখন তিনি ’কে ওখানে’ বললে সেই ব্যক্তি উঠে দাঁড়ায়। তখন সাংবাদিক সুজয় ’চোর চোর’ বলে দুইবার চিৎকার দিলে ওই সন্ত্রাসী তার গলায় দা ধরে গালি দিয়ে বলে, চিৎকার করলে লাশ ফেলে দেবো। এ সময় আশে পাশে লুকিয়ে থাকা আরো ১০/১১ জন সন্ত্রাসী বের হয়ে তাকে ঘিরে ফেললে সুজয় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে তাদের কাছে চিৎকার করার জন্য ক্ষমা চান এবং তার কোন ক্ষতি না করার জন্য মিনতি করেন। এ সময় গলা দা ধরা ব্যক্তি তাকে প্রশ্ন করে, এটা কি তোর বাড়ি? তিনি হ্যাঁ সূচক জবাব দিলে ওই ব্যক্তি তাকে বলেন, সোজা কোন কথা না বলে বাড়ির ভিতরে চলে যা। কোন শব্দ করবি না। সুজয় মটরসাইকেল ঠেলে বাড়ির দিকে প্রবেশের করতে থাকলে তারা আর কোন কথা না বলে দল বেঁধে হাঁটতে হাঁটতে পলাশপোল বউ বাজারের দিকে চলে যায়। এ সময় সুজয় নিজেকে সামলিয়ে চিৎকার করে এবং পুলিশকে খবর দেয়। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে আসে এবং কিছুক্ষণ পর সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক সেখানে হাজির হন। কিন্তু ততক্ষণে তাদের কেউ দেখতে পাইনি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সেলাই রেন্স উদ্ধার করে। এসময় হাফিজুর রহমান মাসুম বাড়ির বাইরে ছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকা অবস্থাতেই তিনি বাড়িতে ফেরেন এবং ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন। সাংবাদিক সুজয় আরো জানান, সশস্ত্র ব্যক্তিদের প্রত্যেকেই খালি গায়ে ছিল এবং তাদের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিলো। তারা প্রত্যেকে ফুটবল খেলার হাফ প্যান্টের উপরে লুঙ্গি মালকোচা মারা অবস্থায় ছিল। প্রায় প্রত্যেকের হাতে ধারালো দা থাকলেও একজনের হাতে একটি কুড়াল ছিল।
এদিকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের রহস্যজনক আচরণ ও তাদের ওৎ পেতে থাকার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় সকলের মধ্যে নানা জল্পনা কল্পনা বাসা বেধেছে। সবার প্রশ্ন- তারা আসালে কারা ছিলেন? সাংবাদিক সুজয় তাদের সামনে হঠাৎ উপস্থিত হওয়ায় তাকে ভীতি প্রদর্শন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা কোথায় চলে গেলো? তারা কি আসলে অন্য কারও জন্য অপেক্ষা করছিল?
নাকি তারা আসলে ডাকাত ছিলো। নানা প্রশ্নে জর্জরিত করেছে সাতক্ষীরার সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজকে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সেদিন রাতের ঘটনা আমরা তৎক্ষণাৎ অবগত হয়েছি এবং এবিষয়ে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। সন্ত্রাসী যে বা যারাই হোক তাদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে অজ্ঞাত নামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দল কর্তৃক শহরের দুই সাংবাদিকের বাড়ির সামনে মহড়়া দেওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা সাংবাদিক ফোরাম (রেজিঃ নং ৫৮৩/০৪) এর নেতৃবৃন্দ। সাথে সাথে উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃৃৃতি প্রদান করেছেন, সংগঠনের সভাপতি মোঃশহিদুল ইসলাম (দৈনিক প্রবাহ), সাধারন সম্পাদক শেখ আমিনুর হোসেন (দৈনিক তৃতীয় মাত্রা ও দৈনিক পত্রদূত), সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশাররফ হোসেন আব্বাস (দৈনিক মুক্তখবর), সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্বা কাজী নাছির উদ্দীন (দৈনিক আমার সংবাদ), যুগ্ন-সম্পাদক শেখ বেলাল হোসেন (দৈনিক গণজাগরণ ও দৈনিক পত্রদূত), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জিয়াউর রহমান জিয়া (দৈনিক বঙ্গজননী), অর্থ সম্পাদক মোতাহার নেওয়াজ মিনাল (দৈনিক দক্ষীনের মশাল), ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম আক্কাজ (দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা), কার্য্য নির্বাহী সদস্য মোঃআবুল কালাম (সাপ্তাহিক মুক্তস্বাধীন),আনিছুর রহমান তাজু (দৈনিক যুগের বার্তা), আরীফ মাহমুদ (দৈনিক যায়যায়দিন,দৈনিক পত্রদূত), মোঃ আব্দুল মতিন (দৈনিক যায়যায়দিন,দৈনিক দেশ সংযোগ) মোঃ হেলাল উদ্দীন (ক্রাইম প্রতিদিন, সিপি টি ভি), কাজী ফখরুল ইসলাম রিপন (দৈনিক সোনালীবার্তা) ও এ এইচ এম তুমু (দৈনিক তৃতীয় মাত্রা)। নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।