মাসুদ বেপারী, স্টাফ রিপোর্টার:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা থেকে পদত্যাগ করা সমন্বয়করা নতুন প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন। ‘সম্মিলিত গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে নতুন সংগঠন ঘোষণা করেছেন তারা। সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় তারা। এ সময় চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুর রশীদ জিতুকে আহ্বায়ক এবং ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাবেক সমন্বয়ক ফাহমিদা ফাইজাকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।
এ ছাড়া ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ারকে নতুন সংগঠনের মুখপাত্র এবং ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাবেক সমন্বয়ক রুদ্র মুহাম্মদ সফিউল্লাহকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইমরান শাহরিয়ার বলেন, ‘একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পুরো জাতির বুকে জাগ্রত হয়েছিল একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন, যে নতুন বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি থাকবে না, বৈষম্য ও নিপীড়ন থাকবে না।
যেখানে থাকবে ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা, সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হবে নিরাপদ ও উচ্চশিক্ষার জন্য যথোপযুক্ত স্থান।
এই স্বপ্নকে সামনে রেখে আপামর জনতা নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দেয়। কিন্তু বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি, যে চেতনাকে লালন করে মানুষ এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল, সেই চেতনা এই সরকার লালন করতে পারছে না। সরকারের ভেতরে ফ্যাসিবাদের দোসর ও বাইরে ফ্যাসিবাদপন্থি শক্তি অন্তর্বর্তী সরকারকে এই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে একের পর এক বাধা দিয়ে যাচ্ছে।’
গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে ইমরান শাহরিয়ার বলেন, ‘ধীরে ধীরে ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনর্বাসিত হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে মানুষের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। যে সংস্কারগুলো আমরা আশা করেছিলাম, সেসব সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলোতে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থায় গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য সম্মিলিত গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম করেছি আমরা। গণ-অভ্যুত্থান রক্ষায় সর্বশক্তি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করব। প্রয়োজনে আবারও রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত আছে আমাদের প্ল্যাটফর্ম।’
এর আগে, ৩ অক্টোবর বিকাল পৌনে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৭ জন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়ক একযোগে পদত্যাগ করেন।