ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনী লাগাতার হামলা ও বিস্ফোরণ চালাচ্ছে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ তে রকেট হামলায় একজন নিহত হওয়ার পর এবার জানা গেল, ইউক্রেনের সেনারা পাঁচ বাংলাদেশিকে তাদের একটি শিবিরে জিম্মি করে রেখেছে। ঢাকায় রাশিয়া দূতাবাস তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে যে ইউক্রেনের সেনারা পাঁচ বাংলাদেশিকে জিম্মি করেছেন। গতকাল ৪ মার্চ (শুক্রবার) জিম্মি হওয়া বাংলাদেশিরা তাদের উদ্ধারের জন্য আকুতি জানাচ্ছেন এমন একটি ভিডিও দেখা গেছে।
এছাড়া জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের বাংলা বিভাগ বলছে, ইউক্রেনের কিভারতিসি শহরের একটি অভিবাসী শিবিরে আটকে আছেন পাঁচ বাংলাদেশিসহ শতাধিক বিদেশি।
প্রকাশ হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে রিয়াদুল মালিক নামের একজন বাংলাদেশি নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, 'ইউক্রেন সেনারা বাংলাদেশি কয়েকজনকে তাদের শিবিরে আটকে রেখেছে। একজন দরজায় পাহারা দিচ্ছেন। তাদের সবার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। একটি মোবাইল তারা লুকিয়ে রাখতে পেরেছেন। এই শিবিরকে ইউক্রেনের সেনারা ঘাঁটি বানিয়েছে। রাশিয়া সেনাঘাঁটি দেখে দেখে বোমা ফেলছে। আমরা অনেক ভয়ে আছি। আমাদের আটকে রেখেছে জিম্মির মতো করে। ১০০-র ওপর মানুষ আছে এখানে। রাত হলে বোমার শব্দ শুনতে পাই। গুলির শব্দ শুনতে পাই। লাইট বন্ধ করে দেই। আমরা যেখানে তিনজন মানুষ থাকি, সেখানে ১০ জন এনে রেখেছে।'
এছাড়া শিবিরে থাকা ব্যক্তিদের মারধর করা হয়েছে জানিয়ে রিয়াদুল মালিক বলেন, 'আমাদের মারধোর করা হয়েছে, ইউক্রেনের অন্য ক্যাম্পগুলোর সবই বোমা ফেলে উড়িয়ে দিয়েছে এরই মধ্যে। এই শিবিরটা শুধু আছে। আমরা জানি, না, আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কতটুকু আছে। আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করার জন্য। আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমরা বেলারুশ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে আছি। যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হতে পারে। এখানে অনেক দেশের ১০০ জনের ওপর মানুষ আছে। নারী ও শিশু আছে। ওরা কাউকে মুক্তি দিচ্ছে না।'
ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, 'ইউক্রেনের কারাগারে বা বন্দিশিবিরে থাকা বাংলাদেশিদেরও উদ্ধার করে নিয়ে আসার লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে কাজ করছে।'
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে এবং এ পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে।