১২ই নভেম্বর, ২০২৫

জোরপূর্বক শারিরিক-বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর জমি দখল

তুষার আহমেদ মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি

মহম্মদপুরের বাবুখালী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামে মো: নূর ইসলাম মোল্যা (৩৫) নামের এক শারিরিক-বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের আরমান মোল্লা (৪৫) এর নামে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাবুখালী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমান মোল্যার শারিরিক-বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে মো: নূর ইসলাম মোল্যা ও তার মা মালঞ্চ বিবি কোন রকম একটি ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করেন। প্রতিবন্ধী নুর ইসলামের ওয়ারিশ সুত্রে পাওয়া বাড়ি সংলগ্ন পূর্ব পার্শের ৪২ শতাংশেরএকটি জমি প্রতিবেশি আরমান মোল্যা ও ছিরমান মোল্যা অবৈধভাবে জোর পূর্ব দখল করেছেন।

জানা গেছে, একই গ্রামের মৃত গোলাম সরোয়ার মোল্যা ও ছাদেক মোল্যা আপন দুই ভাই হাটবাড়িয়া মৌজার সাবেক ৪৫১৮/৪৫১৯ দাগের ৪২শতাংশ জমি ১৯৭২ সালে মাগুরা সদরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লুৎফর ফকির ও হামিদ ফকিরের নিকট বিক্রী করেন। পরবরর্তীতে লুৎফর ফকির ও হামিদ ফকির ১৯৮০ সালে উক্ত জমিটি রামকৃকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত ফটিক মোল্যার ছেলে হবিবুর রহমান মোল্যা, মুজিবর মোল্যা ও আতিয়ার মোল্যার নিকট বিক্রী করেন। জমি ক্রয়ের কিছুদিন পর হাবিবুর মোল্যার মৃত্যু হয়। প্রতিবন্ধী সন্তান নুর ইসলামকে নিয়ে মালঞ্চ বিবি দীর্ঘ ৪৫ বছর উক্ত জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলেন। কিন্তু গত বছর থেকে জমির পূর্বের মালিক মৃত গোলাম সরোয়ার মোল্যার ছেলে আরমান মোল্যা ও ছিরমান মোল্যা উক্ত জমিটির ওয়ারিশ দাবী করে কোর্টে মামলা করেন।

এবিষয়ে স্থানীয় লোকজন শারিরিক-বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নুর ইসলামের পক্ষে কথা বলায় আরমান মোল্যা একই গ্রামের ৯ জনকে আসামী করে কোর্টে মামলা করেছেন। এছাড়া জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করিয়ে নিজেই ভঙ্গ করে ১৮৮ ধারা জারি করিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘকাল জমিটি প্রতিবন্ধী নুর ইসলামদের বলে জানি। কিন্তু হঠাৎ গত একবছর আগে শুনি আরমান ও ছিরমান জমি পাবে। বাকি মোল্যা নামে একজন বলেন, নুর ইসলাম শারিরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সুযোগ বুঝে হাল রেকর্ড পূর্বের মালিকের ওয়ারিশ আরমান মোল্লা গোপনে নিজেদের নামে করিয়ে নিয়েছেন, আমরা এর সঠিক আইনি সহায়তা কামনা করছি। নিজাম উদ্দিন শিকদার নামের একজন বলেন, মহম্মদপুর সেটেলমেন্ট অফিসে ঘুষ দিয়ে আরমান নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে এনেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

অভিযুক্ত আরমান মোল্যা বলেন, ওয়ারিশ সুত্রে আমরা জমির মালিক। কোর্টে মামলা করেছি । প্রতিবেশীদের নামে মামলা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তারা জমির মালিক না অথচ বিনা কারণে তারা জমিতে গিয়ে ঝামেলা পাকাচ্ছে। তাই তাদেরকে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের নামে মামলা করেছি। জমিতে ১৪৪ জারি থাকার পরেও তিনি জমিতে আল কাটেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি আমার দখলে আমি যা ইচ্ছা করতে পারি, তাই আমি আবার ১৮৮ করিয়ে এনেছি।

ভুক্তভোগী শারিরিক-বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মো. নুর ইসলাম বলেন, আমার বাপ কিনে থুয়ে গেছে। এখন ছিরমান আরমান জোর করে দখল করে নিয়ে গেছে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর পক্ষে গ্রামবাসী সঠিক বিচার দাবি করেছেন।

মন্তব্য করুন